শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিরোজপুর শিক্ষককে হাতুড়িপেটা, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন নেছারাবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোহার পুল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মঠবাড়িয়ায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ, স্বামী ও শ্বশুর আটক পিরোজপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা কাউখালীতে মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান নেছারাবাদে ২৬ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা পিরোজপুরে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ভান্ডারিয়ায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নদীতে জাল ফেলছে জেলেরা! মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ পিরোজপুর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর কমিটি গঠন: সোহাগ সভাপতি, মিঠু সম্পাদক কাউখালীতে অপহরণের তিন মাস পর সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উদ্ধার কাউখালীতে জেলের মরদেহ উদ্ধার ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীর প্রথম ক্লাস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা ভাণ্ডারিয়ার চাঞ্চল্যকর আসমা হত্যার বিচার দাবিতে পিরোজপুরে মানববন্ধন কাউখালীতে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত মঠবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেফতার
ক্ষমা করিবেন মানিক মিয়া- আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

ক্ষমা করিবেন মানিক মিয়া- আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

আপনার প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ইত্তেফাক নানারূপ ঝড়-ঝঞ্ঝা-প্রতিকূলতা এবং আনন্দ সফলতায় বিগত ৬৬ বৎসর পার করিয়া আজ ৬৭ বৎসরে প্রবেশ করিল। দেশের এই ঐতিহ্যবাহী পত্রিকাটির যাত্রা শুরু হইয়াছিল আপনার হাতে এক গভীর রাজনৈতিক মতাদর্শকে ধারণ করিয়া। একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য লইয়া ইত্তেফাক যাত্রা শুরু করিয়াছিল। ইত্তেফাক ছিল একটি রাজনৈতিক দলের মুখপত্র। সেই সময় ইত্তেফাকের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়াইয়াছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। আপনারা ছিলেন একই সূত্রে গাঁথা। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর অবদানও ছিল অনস্বীকার্য।

রাজনৈতিক উদ্দেশে, রাজনীতির জন্য ইত্তেফাকের সঙ্গে কর্মী-সহযোগী যাহারাই ছিলেন, তাহাদেরও ছিল একই রাজনৈতিক লক্ষ্য। পিছনের বৎসরে ভাষা আন্দোলনের রক্ত এবং সামনে পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের নির্বাচন রাখিয়া ১৯৫৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করিয়াছিলেন। শুরু হইতেই বৈরী ভাবাপন্ন অত্যাচারী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইত্তেফাকের কণ্ঠ ছিল সোচ্চার।

কারাগারে প্রেরণ, দমন-পীড়ন সব ধরনের ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করিয়া আপনি দৈনিক ইত্তেফাককে এবং ইত্তেফাকের ভাষ্যকে আপামর মানুষের দ্বারে পৌঁছাইয়া দিয়াছিলেন। দিশাহীন জাতিকে দিকনির্দেশনা দিতে দৈনিক ইত্তেফাক যে ভূমিকা রাখিয়াছে তাহা শুধু এই দেশেরই নয়, বিশ্বের সংবাদপত্রের ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত। ইহা আজ গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করা যায় যে গোটা ষাটের দশকের উত্তর সময় দৈনিক ইত্তেফাকের যে ভূমিকা ছিল তাহা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে সহায়তা করিয়াছিল। সুতরাং ইত্তেফাক কেবল একটি দৈনিক পত্রিকাই ছিল না, বরং ইহা ছিল গণতান্ত্রিক চেতনাকে উজ্জীবিত করিবার একটি প্রতিষ্ঠান।

তখন একটি রাজনৈতিক আদর্শ আপনার সম্মুখে ছিল। আপনি যাহাদের সঙ্গে রাজনীতি করিতেন, সম্মুখ হইতে হউক আর পিছন হইতে হউক, যাহাদেরকে আপনি প্রেরণা যোগাইয়াছেন এবং আপনি যাহাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হইয়াছেন তাহারা কেহই এখন আর জীবিত নাই। আপনিও আমাদের মাঝে নাই। ইহার মধ্যে স্বাধীন হইয়াছে বাংলাদেশ। অতঃপর আপনার অনুপস্থিতিতে আমরা চেষ্টা করিয়া গিয়াছি। কিন্তু এখন বাস্তব চিত্র পালটাইয়াছে অনেক। প্রতিনিয়তই আপনার প্রতিষ্ঠাকালীন চিন্তা ও মতাদর্শকে ধরিয়া রাখিতে আমাদের বেগ পাইতে হইতেছে। বহু বাস্তবতা আপনার আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হইয়া আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হইতেছে।

আরও পড়ুন: ৬৭ বছরে ইত্তেফাক, ঐতিহ্যের পথ ধরে তারুণ্যের আলোয়

বর্তমানে সংবাদপত্র হইয়াছে শিল্প। এই শিল্প এখন রাজনৈতিক চেতনার পরিবর্তে আমাদের ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতার কথা বলে, ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতার শিক্ষা দেয়। ফলে আমরা সর্বদা আপনার আদর্শকে ধারণ করিতে পারিয়াছি, তাহা নিশ্চিত করিয়া বলিতে পারিব না। যাহা পারিয়াছি তাহা আপনারই রাখিয়া যাওয়া স্পৃহার ফল, আর যাহা পারি নাই, তাহার জন্য আপনার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নাই।

তাহার পরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকিবে। এতকিছুর পরও আমরা হতাশ নহি। এই বৈরী অবস্থা থাকিবে না বলিয়া আমরা বিশ্বাস রাখি। দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পালটাইতেছে। আমরাও সেই পরিবর্তিত সময়ের সঙ্গে চেষ্টা চালাইয়া যাইব আপনার আদর্শ ও চেতনায় উজ্জীবিত থাকিতে। কবির ভাষায় বলিতে হয়, ‘তোমার তারায় মোর আশাদীপ রাখিব জ্বালি/ তোমার কুসুমে আমার বাসনা দিব গো ঢালি’।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana